আশান উজ জামান

দেখা। লেখা। পড়া

বন্ধু হিসেবে ‘যদি’ আর ‘কিন্তু’র চেয়ে ‘তবু’ ভালো। তার চেয়েও ভালো ‘বা’ ‘অথবা’ ‘কিংবা’।

‘কিন্তু’ আর ‘যদি’ সংশয়ী, ভয়তেড়ে, অতিসাবধানী, এবং অনুৎসাহী। প্রতিটা কাজের শুরুতে ভয় ঝুঁকি লজ্জা এটা সেটা ভারী ভারী না-বোধক শব্দ তুলে কথা বলে, উদ্যোম কমিয়ে দেয়, বাঁধাও দেয় কখনও কখনও। অমন সময়গুলোতে গাছের গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়ানো শক্ত লাঠির মতো শক্তি নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে যায় ‘তবু’। দু’হাত দিয়ে ‘যদি’ আর ‘কিন্তু’কে নিরস্ত করে। আর সারাস্বর এক করে সর্বোচ্চ তারে বলে, ‘বাঁধা আচ্ছে বিপত্তি আছে, হেরে যাওয়া ঝুঁকি আছে, আছে হারিয়ে যাওয়ার ভয়, তারপরও এই কাজটা করতে হবে। করতে হবে, কারণ তুমি এটা করতে চাও। এই কাজটা করার স্বপ্ন দেখেছো সবসময়। ফলে অতশত চিন্তা না করে কাজটাই শুরু করো।’ এক্ষেত্রে ‘বা’, ‘অথবা’ আর ‘কিংবা’ আরও ভালো। ওরা জানে থেমে থাকলে প্রমত্তা নদীতেও পলি জমে, চর জাগে। তাই জয় পরাজয় ভয় সংশয় আর ভেঙে পড়া কিংবা দুঃখ ব্যথা ভয়ের রাতে একের পর এক বিকল্প নিয়ে পাশে থাকে। সাহস দেয়, উদ্যোম জোগায়। বলে, ‘এটা ওটা সেটা যেটা খুশি করো, তবু করো। তবু হতাশ হয়ো না, থেমে থেকো না।’

‘এবং’ ‘ও’ ‘আর’ও খারাপ না। মানুষ বরং এদেরই চায় বেশি, ভালোও বেশি বাসে। তবে সমস্যা হলো, ওরা একসঙ্গে থাকতে চায়, একসাথেই করতে চায় সবকিছু। কিন্তু জীবন তো একলার, সবসময় সবাই মিলে তাকে চালিয়ে নেওয়া যায় না। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সবার অপেক্ষায় থাকলে অপেক্ষাটাই হয়, চলাটা হয়ে ওঠে না। গতি কমে যায়, ক্ষতি বেড়ে যায়।

ঠিকমতো বন্ধু বেছে নেওয়া তাই গুরুত্বপূর্ণ। বেছে বেছে বন্ধু পাওয়া প্রায় অসম্ভব যদিও, তবে বেছে বেছে তাদের বাদ তো দেওয়া যায়। চিটাগুলোকে উড়িয়ে দিতে পারলে শেষে ঠিক বন্ধুরাই পড়ে থাকে পাশে। আর ঠিক বন্ধুর চেয়ে বড় পাওয়া খুব কমই আছে মানুষের জীবনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *