৩. সৌরভী আলম আঁখি

স্বরূপকথা এবছর আমার পড়া প্রথম বই। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পড়া শেষ করি। রিভিউ লিখবো, লিখবো করেও লেখা হচ্ছিলো না। আসলে কিছু বই থাকে যেসব বই নিয়ে লিখতে ইচ্ছা করে না। এই লিখতে ইচ্ছা না করার কারণটা কিন্তু ভিন্নরকম।

বই তো কতো’ই পড়া হয়, কিন্তু যে বই পড়ে মনে তৃপ্তি পাবো সে বই পাওয়া যায় কালেভদ্রে। আর যেহেতু আমি উপন্যাসের মানুষ, ভালো উপন্যাস খুঁজে পেলে পড়ার তৃষ্ণা কয়েকগুণে বেড়ে যায়।

স্বরূপকথা প্রাগৈতিহাসিক এক সমাজের গল্প বলে, সে সমাজে এক মগ্নপুরুষ – যে বলতে চায়, কিন্তু পারে কম। আবার একঘরে এক নারী যে কথা বলতে পারে, কিন্তু বলে কম। কেমন ছিলো তাদের জীবন, সেই সময়কার সমাজ? কেমন করে তারা নিজেদের প্রস্তুত করছিল ভবিষ্যতে আমাদের জীবিকার, সামনে এগিয়ে চলার শক্তি হতে?

আর লেখক আশান উজ জামান এর কাছে জানতে ইচ্ছা করে, ‘গাছটার শিকড় ছেঁড়া। বাঁচবে তো?’

যারা ভিন্নধর্মী বইয়ের খোঁজে আছেন তারা নিঃসন্দেহে এই বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। বইটির প্রকাশকাল গতবছর হলেও, আজীবন সংগ্রহে রাখার মতো একটি বই।


২. হাসান মাহবুব। কথাসাহিত্যিক

সে অনেক আগের কথা। কত আগের কথা? প্রায় ত্রিশ হাজার বছর আগের! অত আগের কথা কি আমরা ভাবতে পারি? এখন তো দশ বছরেই সবকিছু পুরোনো হয়ে যায়। বদলে যায় ভাষা, বদলে যায় গেজেট, বদলে যায় সঙ্গীত, বদলে যায় জীবন যাপনের যাবতীয় অনুষঙ্গ। মহাকালের আবর্তে আমরা ক্রমশই তলিয়ে যাই। এই মহানিমজ্জনের কালে কেউ যদি শোনায় আমাদের গুহাবাসী আদিপিতাদের কথা, যারা পাথর খুঁদে তৈরি করতো অস্ত্র, কাঁচা মাংস আগুনে ঝলসে খেয়ে মেতে উঠতো জীবনের উল্লাসে, সেই গল্প শোনার ধৈর্য এই প্রজন্মের হবে কি না জানি না, তবে মহাপুস্তকের পাতায় এই গল্পের জন্যে অবশ্যই একটা বিশেষ স্থান থাকা উচিত। সেই গল্পটাই শুনিয়েছেন আশান উজ জামান তার সাম্প্রতিক উপন্যাস “স্বরূপকথা”তে, বাংলা ভাষায় এমন লেখা, তাও আবার এত বড় পরিসরে আছে বলে আমার জানা নেই। ত্রিশ হাজার বছর আগের পৃথিবীর গল্প বলতে হলে প্রচুর প্রস্তুতি প্রয়োজন। তৈরি করতে হবে পৃথিবীর বুকে এক টুকরো নতুন পৃথিবী। কোথায় গেলে পাওয়া যাবে জলের সন্ধান, কোথায় মিলবে সাগরসোহাগী অন্তরীপ, দেবগাছ আর আলোপাতার মাঝখানে আছে ঘাসফুলের কোন বংশ, নিজের বসতি থেকে কতদূর গেলে বনমানুষদের আক্রমণের শঙ্কায় মনের তন্ত্রী বাজানো শুরু করবে বিপদের সংকেত এমন অসংখ্য বিস্তারিত উপাদান দিয়ে একটা প্রতিবেশ তিনি তৈরি করেছেন নিপুণ হাতে।

একজন লেখকের রিসোর্স হতে পারে কয়েকরকম। প্রচুর বই, অভিজ্ঞতা, এবং কল্পনা। স্বরূপকথা’তে কল্পনার সুচারু প্রয়োগ বিস্ময় জাগায়। তার ভাষা এতটাই চিত্রময়, যে চোখের সামনে দৃশ্য ভেসে ওঠে। বইয়ের শেষে ভেবেছিলাম সহায়ক গ্রন্থের একটা বড় তালিকা থাকবে। সেটা না থাকাতে নিশ্চিত হওয়া যায় তার ধ্যান এবং নিমজ্জন এর ব্যাপারে। বইটিতে লেখকের মূল প্রচেষ্টা ছিলো আদিম পৃথিবীর দিনকালকে নিখুঁতভাবে উপস্থাপন করতে। বিশাল কলেবরের এই উপন্যাসটিতে তাই পাতার পর পাতা অনেকসময় থেকে গেছে তেমন কোন ঘটনা ছাড়াই। আপনি যদি লেখার আবহের সাথে ভালোভাবে সম্পৃক্ত হতে পারেন, তাহলে আপনার এই জল-জঙ্গল, সাগর-অন্তরীপে ঘুরে বেড়াতে এবং নতুন কোন শিকারের কৌশল উদ্ভাবন করতে, বিশ্রাম অথবা স্নানের জন্যে নতুন কোন জায়গা খুঁজতে খারাপ লাগবে না। তারপরেও যদি আপনার কাছে গতি ধীর মনে হয়, সময়মত পেয়ে যাবেন নতুন উত্তেজনা।

উপন্যাসটিতে আমরা কাছাকাছি জায়গায় দুটি মানবপ্রজাতিকে দেখতে পাই। হোমো স্যাপিয়েন্স আর নিয়ানডারথাল। হোমো স্যাপিয়েন্স নারী হু এর সাথে নিয়ানডারথাল নর অব এর প্রণয়পর্ব থেকেই মূলত হোমো স্যাপিয়েন্স পাড়ার দৈনন্দিকতা বের হয়ে কাহিনী গতি পাওয়া শুরু করে।মান এর জন্মের পর থেকে কাহিনী জল-জঙ্গল চরিত বর্ণনের পাশাপাশি তুমুল গতিতে মানব মন আর আচরণকে অবলম্বন করে লতিয়ে ওঠে। অন্যদের চেয়ে আলাদা, জিজ্ঞাসু এবং কৌতূহলী মান এর জন্ম এবং বেড়ে ওঠার মাধ্যমে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক বিবর্তনের। এদিকে নিয়ানডারথাল পাড়ার ক্রমাগত মৃত্যু আর কমজোর হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তাদের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার বেদনাদায়ক আখ্যান। তবে বইটিতে কোথাও হোমো স্যাপিয়েন্স অথবা নিয়ানডারথাল বলে আলাদাভাবে কিছু উল্লেখ করা নেই। এক প্রজাতির কাছে আরেক প্রজাতি হলো বনমানুষ। এটা পাঠকের মধ্যে কিছুটা সংশয় তৈরি করতে পারে। বইয়ের ফ্ল্যাপে অবশ্য ছোট করে উল্লেখ আছে, তবে সেটা অনেকের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে। পুরো বই জুড়ে যে দ্বান্দ্বিক অবস্থানটি রোমাঞ্চের আবহ যুগিয়ে গেছে তা হলো দলপতি নির্বাচন এবং নারীর দখল। পৃথিবীর আদিম অপরাধগুলি আজ নানা শাখা-প্রশাখা বিস্তার লাভ করেছে, তবে মূল কিন্তু ঐ দুটোই। নারী আর ক্ষমতা। তবে কেন যেন মনে হয়েছে উপন্যাসের দলপতিরা একটু বেশিই সদয়। যেমন সর্দার আফা রাবাকে মারার সিদ্ধান্ত নিলে পারা তাকে নিষেধ করে। আবার কৃশকায় সন্তান জন্মদানের পরেও হু’কে হত্যা না করে আলাদা গুহায় বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। কিছুক্ষেত্রে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনের যুক্তিকে অতিমাত্রায় জটিল মনে হয়েছে সে সময়কার মানুষের তুলনায়। যেমন, হু’কে যখন দলপতি হিসেবে নির্বাচন করার প্রস্তাব তোলা হয়, তখন হু প্রত্যাখ্যান করে এই বলে, সে দলপতি হলে তার ছেলের প্রতি অন্যায়-অবিচারের বিচার করতে গিয়ে সে বেশি কঠোর হয়ে যাবে, তাই দলপতি হবে না। কিছু কিছু জায়গায় শব্দচয়ন এবং বাক্যের ব্যবহার যথাযথ মনে হয় নি। যেমন, কয়েকজায়গায় ‘শিশু’ বোঝাতে ‘পিচ্চি’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এক জায়গায় ব্যবহৃত হয়েছে “খবর আছে”। উপন্যাসের প্রথম দিকে ‘বিয়ে’ শব্দটি ব্যবহৃত হলেও পরে সেটি বদলে “ঘরে তোলা” ব্যবহৃত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোন প্রয়োগটি সঠিক? আমি যতদূর জানি বিয়ের প্রচলন আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে। তাই ত্রিশ হাজার বছর আগের গল্পে বিয়ে শব্দটি থাকা সমীচীন নয়। বিশেষ করে যখন একটি নারী চরিত্র তার পুরুষটিকে বলে “মেয়ে বড় হচ্ছে, বিয়ে দিতে হবে”, তখন যেন আদিম আবহটা হুট করে কেটে যায়। হোমো স্যাপিয়েন্স আর নিয়ানডারথালদের ভাষার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রাখা হয়েছে। নিয়ানডারথালদের ক্ষেত্রে সেটা যথাযথ ছিলো, তবে হোমো স্যাপিয়েন্সদের ক্ষেত্রে কিছু কিছু জায়গায় মনে হয়েছে আরেকটু সরল হলে ভালো হতো। যেমন, কোন এক জায়গায় কাউকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে “ তুমি ঠিক আছো তো? কোন সমস্যা?”এরকম খুব বেশি জায়গায় নেই অবশ্য।

স্বরূপকথা পড়েছি প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে, ধীরে ধীরে। এখন আবার ফিরে যাবো শহুরে বাস্তবতায়। হাতে তুলে নিবো কোন ডিস্টোপিয়ান উপন্যাস, অথবা ম্যাজিক রিয়ালিজমের কৌশল দেখানো গল্প। নিজেও লিখতে বসবো এরকম কিছুই। এখন আর লিখতে এমন কি কালি কলমও লাগে না। ভার্চুয়াল অক্ষরে সাজাই শব্দদল। এই মধ্যবিত্ত আয়েশ এসেছে বহুদিনের ত্যাগ আর তিতিক্ষার ফলে। আমাদেরই পূর্বপিতারা কোন একসময় গুহাচিত্রে হরিণ এঁকেছিলেন বলেই আমরা এখন পরাবাস্তবতা চর্চা করতে পারি। সেই সময়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে আশান উজ জামানকে ধন্যবাদ। বইয়ের শেষ লাইনে সমুদ্রের গর্জনের সাথে মানুষের ধ্বণি মিলেমিশে যে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হয়, তা আমাদের জীবনচর্চায় রাখা উচিত। “গাছটার শিকড় ছেঁড়া। বাঁচবে তো?”

১. নাহিদ ধ্রুব। কবি ও কথাসাহিত্যিক

যার গৃহ নাই, সে গৃহ খোঁজে। ক্ষুধার্ত প্রাণ খোঁজে খাদ্য। পাথরে পাথর ঘষলে আগুন জ্বলে, আবার অতলান্ত জলে স্পষ্ট দেখা যায় জেলেদের অস্তিত্ব। বিচ্ছিন্ন অনেক জীবন, জীবনের অনেক সাধ, সংগ্রাম, প্রেম, যুদ্ধ কিংবা সার্ভাইভেল ফর দ্যা ফিটেস্ট থিয়োরি দমকা হওয়ার মতো ফিরে ফিরে এসেছে ‘স্বরূপকথা’ উপন্যাসে, আল্পনা আঁকার মতো করে জীবনের চেয়েও বড় ক্যানভাসে আশান উজ জামান এঁকেছেন জীবনের অমোঘ গল্প। উপন্যাস নিয়ে বিস্তারিত বলার আগে পাঠক হিসেবে নিজেকে নিয়ে একটু কথা বলা খুব জরুরী, পাঠক আমি মারাত্মক ইম্পালসিভ, পাঠে আনন্দ না পেলে, গদ্যের ভাষা আমাকে না টানলে, গল্প / আঙ্গিক / আইডিয়া/ ডিটেলিং / মনোলগ/ স্টিম অব কন্সাসনেস আমাকে টাচ না করলে, আমি খুব দ্রুত হারাই কন্সেন্ট্রেশন। বড় উপন্যাসে ক্ষেত্রে হয়তো গল্প ঝুলে যাওয়ার এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে, দেড় লাখ কিংবা তারও অধিক শব্দের উপন্যাসে লেখকের জন্য এই প্রসেসটা, এই জার্নিটা সেইম টেম্পো মেইনটেন করে ধরে রাখা এবং পারফেক্টলি শেষ করা রীতিমত চ্যালেঞ্জিং একটা ব্যাপার।

স্বরূপকথা সম্ভবত ১ লাখ ৪২ হাজার শব্দের উপন্যাস। আমি উপন্যাসটা পড়া শেষ করেছি আড়াই দিনে। উপন্যাসের ন্যারেটিভ, গল্প আমাকে টেনে নিয়ে গেছে চুম্বকের মতো। পেইজ টার্নার উপন্যাস বলতে আমরা যা বুঝি, ‘স্বরূপকথা’ ঠিক তাই। ‘স্বরূপকথা’ একটি পিওর ফিকশন। গল্পধর্মী উপন্যাস। এই গল্পের মধ্যে এতো প্রাণ ছিল, পড়তে শুরু করার পর, আই গট হুকড। খুব কম উপন্যাসই আমি শেষ করেছি এতো আগ্রহ নিয়ে। উপন্যাসের ভাষা ঝরঝরে। ছোট ছোট বাক্য। পড়ে যাওয়া যায় ক্লান্তিহীন ভাবে, তবে মাঝেমধ্যে থামতে হয়, কারণ প্রকৃতির বর্ণনা লেখক এতো চমৎকারভাবে করেছেন, মনে হয় মিষ্টি কোন বাতাস সঙ্গ দিচ্ছে পুরোটা সময়, মনে হয় না থেমে যদি দৌড়াই তাহলে হয়তো পুরো রস পারবো না নিংড়ে নিতে। শিকার, গুহাযুগ কিংবা ঐ প্রেক্ষাপট নিয়ে লেখা উপন্যাসে সাস্পেন্স থাকা খুবই জরুরী। ‘স্বরূপকথা’ উপন্যাসেও পাঠক পাবে থ্রিলারের স্বাদ। উপন্যাসের শেষ পাতা পর্যন্ত এক অতিস্তব্ধ অন্তহীন রহস্য পাঠকমনকে ব্যস্ত রাখবে এবং গল্পের পরিণতি আবিষ্কারের সাথে সাথে পাঠকও হবে পরিণত। ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্টে আশান উজ জামান যে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন, সে কথা বোল্ডলি না বললে পাপ হবে। হু, মান, আফা, অব, মোমো, পারা থেকে শুরু করে সকল চরিত্রই নিজের জায়গায় আলাদা আলাদাভাবে উজ্জ্বল। প্রতিটা চরিত্র আশান উজ জামান শূন্য থেকে এনে শূন্যে শেষ করে পূরণ করেছেন চক্র। বিশেষকরে প্রোটাগনিস্ট হিসেবে হু’এর চরিত্র আমার মনে থাকবে অনেক অনেকদিন।

এইসব চরিত্র নির্মাণের দিকে যখন তাকাই সচেতনভাবে তখন মনে হয় জল-স্থল-অন্তরীক্ষে কোথাও কোন ফাঁক নেই। রাইটিং টেকনিকের দিক থেকেও এই উপন্যাস আধুনিক। স্টোরিটেলিংয়ে এসেছে ব্যাক অ্যান্ড ফোর্দ টেকনিক, প্রফেসির মতো এসেছে কিছু চরিত্র। নতুন গোত্র এসেছে নতুন ডায়মেনশন নিয়ে, ফলে গল্পের মধ্যে তৈরি হয়েছে নতুন নতুন লেয়ার আর প্রতিটি লেয়ারের রঙ আলাদা। প্যারালালি বলা দুটো গল্পের মধ্যে জাম্প এতো স্মুথ যে পাঠককে অস্বস্তিতে পড়তে হবে না মোটেও বরং মনোযোগ বেড়ে যাবে আরও। ‘স্বরূপকথা’ উপন্যাসটি লেখা হয়েছে গুহাযুগকে উপজীব্য করে, যদিও এই উপন্যাসের গল্প পলিটিক্যালি এখনও প্রাসঙ্গিক। অন্য অনেক বিষয় বাদ দিলেও অন্তত এই এটারনাল ফিল দেয়ার জন্য উপন্যাসটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মধ্যে অপারগতা, হিংস্রতা কিংবা মায়ার যে ছায়া আছে তা জেনারেশন থেকে জেনারেশনে ছড়িয়ে গেছে। সভ্যতার কারণে এসেছে বদল, কিন্তু অনুভূতি এখনও ঠিক তেমনই আছে। জোসেফ কনরাড, হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড, জোনাথন সুইফট কিংবা ফিলিপ কে ডিক’এর লেখার বিচ্ছিন্নভাবে অন্য কোন সময়ে আমি যে ভ্রমণের স্বাদ পেয়েছি, তা ‘স্বরূপকথা’তে এসে পেয়েছে পূর্ণতা।

বাংলা ভাষায় আমি এমন উপন্যাস আগে পড়িনি এবং এই উপন্যাসের একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে, উপন্যাসটা অন্য যে কোন ভাষাতেও লেখা হলেও, উপন্যাসের আবেদন মোটেও কমতো না, কারণ ‘স্বরূপকথা’ একটি গ্লোবাল উপন্যাস। সর্দারের বলা গল্পের মতো বহুবছর পরও মানুষ হয়তো এই উপন্যাস নিয়ে গল্প করবে, শিকার ভাগ করতে করতে হয়ে যাবে গাছ আর পুরো আবহের মধ্যে থাকবে একটা জাদুকরী জার্নি, আমি জানি।