আশান উজ জামান

দেখা। লেখা। পড়া

তপ্ত দুপুর। পুড়ে যাচ্ছে হাত পা। আড়াল হয়ে বাচ্চাদের নিজের ছায়ায় রাখার চেষ্টা করছিল মা। আর ভাবছিল বৃষ্টির কথা। কী যে নির্দয় হয়ে উঠছে সে দিনে দিনে! ইচ্ছে হলে ভাসায়, না হলে খরা! ভাবতে ভাবতেই প্রথম কোপটা লাগল গায়ে।  

তারপর আরেকটা।

তারপর লাগতেই থাকল।  

প্রতিটা কোপের সাথে যোগ হলো যন্ত্রণার পাহাড়।

যন্ত্রণা তার আগেও ছিল।

সেই কবে শিকড় ছিঁড়ে তাকে নিয়ে এসেছিল এরা। লাগিয়েছিল যত্ন করে। দিন যত গেছে, ততই কমেছে সে-কদর। আর বেড়েছে অবহেলা। বহু ঝড়ের ঝাপটা লেগেছে মাথায়। মচকে গেছে বহুবার, কিন্তু ভাঙেনি একবারও। গভীরে গভীরে জড়িয়ে দিয়েছে ক্ষমার শিকড় মায়ার মূল। আকাশে আকাশে ছড়িয়ে দিয়েছে সিক্ত দীর্ঘ শ্বাস। সব ওই বাচ্চাদের কথা ভেবেই তো! কিন্তু আজ আর পারল না।

কুঠারের কোপ শেষ হয়ে এলেই উল্টে পড়ল সে। পড়তে পড়তে শেষ দেখা দেখে নিল বাচ্চাদের।

আহা! কী সুন্দরই না হয়ে উঠেছে ওরা! দেখতে দেখতে কান্না পেল। কিন্তু সে কাঁদল না; চীৎকার করল না। পাছে তার কষ্টের কথা ভেবে কষ্ট পায় বাছারা!

বাছারা তখন তাকিয়ে আছে পাশের ফুলবাগানে। কী চমৎকার সব গাছ! কী সুন্দর ফুল পাতা ফল ওদের! ইশ, মা যে কেন ওদের মায়ের মতো না!

ছবি: francesco carinci on Unsplash

One thought on “মা

  1. একটা কল্যাণী বিষণ্নতা জাগল মনে। এমন লেখা আরো চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published.